হ্যাঁ, ইসলামে মেয়েদের বাইরে কাজ করার অনুমতি আছে, তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে। ইসলামে নারীর প্রধান দায়িত্ব তার পরিবার ও সন্তানের প্রতি, তবে এর অর্থ এই নয় যে তারা বাইরের যেকোনো কাজ থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত। কুরআন বা সুন্নাহতে এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই যা নারীকে ঘর থেকে বের হয়ে কাজ করা থেকে বিরত রাখে। বরং, প্রয়োজনের তাগিদে বা সমাজের কল্যাণে নারীরা কাজ করতে পারেন।
এর প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো, কাজের পরিবেশ ইসলামিক শরীয়াহ অনুযায়ী হতে হবে। অর্থাৎ, কর্মক্ষেত্রে পর্দা বজায় রাখতে হবে এবং বেপর্দা অবস্থায় পুরুষদের সাথে অবাধ মেলামেশা থেকে বিরত থাকতে হবে। নারী যখন বাইরে কাজ করেন, তখন তাকে অবশ্যই শালীন পোশাক পরিধান করতে হবে এবং এমনভাবে চলাফেরা করতে হবে যাতে ফিতনার সৃষ্টি না হয়। কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলা বা হাসি-ঠাট্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত, কাজটি অবশ্যই হালাল হতে হবে। সুদভিত্তিক কোনো কাজ, মদ বা শূকরের মাংস সম্পর্কিত কোনো কাজ, অথবা এমন কোনো কাজ যা ইসলামের মৌলিক নীতির পরিপন্থী, তা নারীদের জন্য জায়েজ নয়।
তৃতীয়ত, পরিবারের অধিকার ও দায়িত্ব যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি নারীর কাজের কারণে তার সন্তানদের প্রতি অবহেলা হয় বা পারিবারিক শান্তি বিঘ্নিত হয়, তাহলে তার জন্য বাইরে কাজ করা উচিত নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর প্রধান কর্মক্ষেত্র তার ঘর। যদি পরিবারে অন্য কোনো পুরুষ সদস্য (যেমন স্বামী, বাবা, ভাই) থাকেন যিনি পরিবারের ভরণপোষণ করতে সক্ষম, তাহলে নারীর জন্য বাইরে গিয়ে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে, যদি পরিবারের আর্থিক প্রয়োজন হয় বা নারী নিজের জ্ঞান ও দক্ষতা সমাজের কল্যাণে কাজে লাগাতে চান, তাহলে শর্তসাপেক্ষে তিনি বাইরে কাজ করতে পারেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও অনেক নারী বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়েছেন, যেমন ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা সেবা এবং জ্ঞানার্জন।
Comments
Post a Comment