ইসলামে ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই শালীন পোশাক পরিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তবে তাদের পোশাকের নিয়মাবলীতে কিছু পার্থক্য রয়েছে যা তাদের শারীরিক গঠন ও সমাজের প্রতি তাদের ভূমিকার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উভয় ক্ষেত্রেই মূল উদ্দেশ্য হলো সতর ঢাকা এবং শালীনতা বজায় রাখা, যা ফিতনা (বিশৃঙ্খলা বা প্রলোভন) থেকে সমাজকে রক্ষা করে।
মেয়েদের পোশাক: মেয়েদের জন্য পোশাকের নিয়মাবলী তুলনামূলকভাবে কঠোর। তাদের পুরো শরীর ঢাকা বাধ্যতামূলক, ব্যতিক্রম শুধু মুখমণ্ডল ও হাতের কব্জি পর্যন্ত। কিছু ফিকাহবিদ পায়ের পাতা ঢাকার কথাও বলেন। পোশাক ঢিলেঢালা হতে হবে যাতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্পষ্টভাবে বোঝা না যায়। পোশাক পাতলা বা স্বচ্ছ হওয়া যাবে না যাতে ভেতর থেকে শরীর দেখা যায়। আকর্ষণীয়, জাঁকজমকপূর্ণ বা পুরুষদের পোশাকের মতো হওয়া যাবে না, যা মনোযোগ আকর্ষণ করে বা পুরুষদের সাদৃশ্য হয়। এই পোশাকের উদ্দেশ্য হলো নারীর সম্মান ও শালীনতা রক্ষা করা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দৃষ্টি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা। অনেক মুসলিম নারী এর জন্য বোরকা বা হিজাব পরিধান করেন, যা এই নির্দেশনাগুলো পূরণ করে।
পুরুষদের পোশাক: পুরুষদের জন্য সতর নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। অর্থাৎ, এই অংশটুকু ঢাকা বাধ্যতামূলক। যদিও পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ শরীর ঢাকার নির্দেশ নেই, তবে শালীনতা বজায় রাখা তাদের জন্যও অপরিহার্য। পোশাক ঢিলেঢালা হওয়া উচিত, এবং এমন পোশাক পরিধান করা উচিত নয় যা নারীদের পোশাকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। পুরুষদের জন্য রেশমি পোশাক এবং স্বর্ণের অলংকার পরিধান করা হারাম। এই বিধানগুলো মূলত অহংকার পরিহার এবং পুরুষদের জন্য একটি নির্দিষ্ট সামাজিক ভূমিকা ও শৃঙ্খলার ইঙ্গিত দেয়।
উভয় লিঙ্গের জন্যই পোশাক এমন হওয়া উচিত যা সমাজের নৈতিক মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পোশাক কেবল শরীর ঢাকার জন্যই নয়, বরং এটি মুসলিম পরিচয় এবং তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশও বটে। এর মাধ্যমে তারা আল্লাহর প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে এবং সমাজের মধ্যে একটি সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করে।
Comments
Post a Comment