Skip to main content

ইসলামে তালাকের নিয়ম কি মেয়েদের জন্য ক্ষতিকর?

 না, ইসলামে তালাকের নিয়ম মেয়েদের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং এটি উভয় লিঙ্গের জন্য, বিশেষ করে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি ব্যবস্থা। ইসলামে তালাক এমন একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপ যা কেবলমাত্র অপরিহার্য পরিস্থিতিতেই অনুমোদিত। ইসলামে বিবাহ একটি পবিত্র বন্ধন এবং তা টিকিয়ে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালাককে "আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় হালাল" বলে অভিহিত করা হয়েছে।

ইসলামে তালাকের বিধান নারীদের প্রতি কোনো প্রকার বৈষম্যমূলক নয়, বরং তাদের কিছু বিশেষ অধিকারও রয়েছে। যেমন:

  • খুলা: যদি একজন স্ত্রী তার স্বামীর সাথে থাকতে না চান এবং সম্পর্কের মধ্যে অসন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে তিনি 'খুলা'-এর মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইতে পারেন। এক্ষেত্রে তিনি স্বামীকে তার প্রদত্ত মোহর ফিরিয়ে দিতে পারেন বা অন্য কোনো শর্তে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারেন। এটি নারীর স্বেচ্ছায় বিবাহ বন্ধন থেকে বেরিয়ে আসার একটি উপায়।

  • কোর্ট বা সালিশের মাধ্যমে তালাক: যদি স্বামী তালাক দিতে রাজি না হয় বা স্ত্রীর উপর অবিচার করে, তবে স্ত্রী শরীয়াহ আদালত বা সালিশ বোর্ডের মাধ্যমে তালাক দাবি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপ নারীর অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • ইদ্দতকাল: তালাকের পর নারীকে একটি নির্দিষ্ট সময় (ইদ্দত) অপেক্ষা করতে হয়, যা সাধারণত তিন মাসিক চক্র। এই সময়ের মধ্যে নারী দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারেন না। এটি মূলত নিশ্চিত করে যে, নারীর গর্ভে তার প্রাক্তন স্বামীর কোনো সন্তান আছে কিনা, এবং এর ফলে পিতার পরিচয় নিয়ে কোনো ambiguity তৈরি হয় না। এই সময়ে স্বামী-স্ত্রী চাইলে সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করতে পারেন। এই ইদ্দতকাল নারীর শারীরিক ও মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি সুযোগও তৈরি করে।

  • মোহরানা ও ভরণপোষণ: তালাকের পর স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করা স্বামীর জন্য বাধ্যতামূলক। যদি মোহরানা বাকি থাকে, তবে তা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও, ইদ্দতকালীন সময়ে স্বামীর উপর স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব বর্তায়।

ইসলামে তালাকের নিয়মাবলী এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে নারী কোনো প্রকার অন্যায় বা অবিচারের শিকার না হন। যদি স্বামী তালাকের অপব্যবহার করে, তবে শরীয়াহ আদালতে এর প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তালাক শেষ অবলম্বন, যখন সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়ে যায় যে, একসঙ্গে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই বিধান নারী ও পুরুষ উভয়কেই তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে উৎসাহিত করে এবং চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে একটি সম্মানজনক প্রস্থানের সুযোগ করে দেয়।

Comments

আরও দেখুন

লোহার জাহাজ ভাসে কেন ?

লোহার জাহাজ ভাসে কেন ? যদি বস্তুর ওজন বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজনের চেয়ে বেশী হলে বস্তুটি তরলে ডুবে  যাবে এবং বস্তুর ওজনের চেয়ে বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজন বেশী হলে বস্তুটি তরলে ভেসে থাকবে। তাহলে লোহার টুকরা পানিতে ভাসবে না কেননা লোহার টুকরা দ্বারা অপসারিত পানির ওজন লোহার টুকরার চেয়ে অনেক কম। লোহার জাহাজের ভিতরটা ফাঁপা বলে জাহাজ যে আয়তনের পানি অপসারণ করে তার ওজন জাহাজের ওজনের চেয়ে বেশী। তাই লোহার জাহাজ পানিতে ভাসে।     

চশমা আবিষ্কার

  ভারতীয় স্থপতি দেবনারায়ণের হাতে বিশ্বের প্রথম চশমা তৈরি হয়। এমনটাই দাবি করছেন ঋষিকুমার আগরওয়াল।  চশমা প্রসঙ্গে আদি শঙ্করাচার্যের লেখা অপরোক্ষানুভুতির ৮১তম শ্লোকে বলা হয়েছে- ‘ঠিক যেমন উপনেত্রের মধ্যে দিয়ে দেখলে সব খুব ছোট বস্তুকে/ বড় দেখা যায়, তেমনি ..’ মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে শুরুর থেকে জেনে নিন- আধুনিক চশমার উদ্ভাবক দেশ হিসেবে সাধারণভাবে ইতালির নাম উচ্চারিত হয়। দূরের জিনিসকে চোখের নাগালে নিয়ে আসার জন্য আতস কাচের ব্যবহার করার নজির দ্বাদশ শতকে ইতালিতে পাওয়া গিয়েছিল। বলা হয়, ১২৮৬ সাল নাগাদ ইতালিরই জিওর্দানো দা পিসা নামে জনৈক ব্যক্তি প্রথমবারের মতো চশমা তৈরি করেন। ১৭২৭ সালে আধুনিক চশমার প্রাথমিক নকশা তৈরি করেন ইতালিরই গিরোলামো সাভোনারোলা। পরবর্তীকালে সাভোনারোলার নকশার সূত্রে চশমা নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয় এবং তা ধীরে ধীরে আধুনিক রূপ পায়। তবে চশমার উদ্ভাবন নিয়ে ইউরোপিয়ানদের এই দাবী কতটা যথার্থ, তা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। কারণ, সমসাময়িক এবং আরও পুরনো কিছু হিন্দু সাহিত্যে চশমার প্রসঙ্গ এর আগেই এসেছে। তাহলে কি চশমার জন্ম ভারতে! ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ অফথ্যালমোলজি’তে ১...

Bhuter Golpo - ভুতের গল্প - অন্ধকার রাত্রি

বয়সে ছোট হোক বা বড়   Bhut   নামটা শোনা মাত্রই আমাদের মনের মধ্যে একটা আলাদা শিহরন বা ভয়ের সৃষ্টি। অথচ মনের মধ্যে শত ভয় থাকা সত্ত্বেও আমরা   Bangla Bhuter Golpo   শুনতে ছাড়তাম না। ছোট বেলায় যেমন দাদু কিংবা ঠাকুমার কাছ থেকে আমরা নানা ধরনের   Vuter Golpo   শুনতাম। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় আমরা সবাই কাজের মধ্যে এত ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছি যে কারো কাছে গল্প শোনানোর সময় হয়ে ওঠেনা। তাই আজকে আমার আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি একটি সত্যি কারের ভূতের গল্প। গল্প টিকে ৮ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তারই প্রথম ভাগটি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আরও   Bengali Love Story   এবং   Funny Jokes in Bengali   পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, আশাকরি গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। Bangla Vuter Golpo Online Reading | ভয়ঙ্কর ভূতের কাহিনি আজকের গল্প - অন্ধকার রাত্রি পর্ব - প্রথম রায় সাহেব থাকেন কলাবাগানে। অনেকখানি ভেতরের দিকে। দেয়ালঘেরা তিন কামরার একতলা একটা বাড়ি। আশেপাশে ছয়-সাততলা বিশাল বাড়ি ঘর উঠে গেছ...

গাওয়া ঘি কাকে বলে? বাসায় কীভাবে খাঁটি ঘি বানানো যায়?

  খাঁটি ঘি কে গাওয়া ঘি বলে। উপকরনঃ দুধের সর- ৫ কেজি পরিমাণ ঠাণ্ডা পানি- ২.৫ লিটার ঘি তৈরির জন্য যা লাগবে- মাটির পাত্র বা মালশা- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য) শিল-পাটা- (সর বাটার জন্য) কাঠের চামচ বা খুন্তি- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য) প্রনালিঃ ১. প্রথমে দুধের সর নিয়ে নিন আর দুধের সর বাটার জন্য একটি পরিষ্কার শিল-পাটা নিন। এরপরে দুধের সর অল্প পরিমাণে করে শিল-পাটাতে নিয়ে বাটতে থাকুন। বাটার সময় পানি দেয়া যাবেনা। সরের পরিমাণ যেহেতু বেশি তাই একবারে সবটুকু একসাথে বাটতে যাবেন না। অল্প অল্প করে সর নিয়ে বেটে নিতে হবে। ২. এবার একটি মাটির পাত্র বা মালশা নিয়ে নিন। তাতে বাটা সর থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে কাঠের চামচ বা খুন্তি দিয়ে ঘুটতে থাকুন। এই প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব ততো দ্রুত করতে হবে। ৩. ভাল করে ঘুটা হয়ে গেলে সর থেকে ক্রিম তৈরি হবে। এভাবে বাকি সর থেকেই ক্রিম তৈরি করে নিন। ৪. ক্রিম তৈরি হয়ে গেলে এর মধ্যে ঠাণ্ডা পানি দিতে হবে। ক্রিমের পরিমাণ অনুযায়ী পানি দিতে হবে।পানি দিয়ে ঘুঁটার পরে ক্রিম থেকে সাদা দুধের মত পানি বের হয়ে ক্রিম পরিষ্কার হয়ে ঘন ডো এর মত উপরে ভেসে উঠতে থাকবে। যখন ক্রিমের সবটুকু ডো...

খাসি এবং পাঠার মধ্যে পার্থক্য কি?

খাসি এবং পাঠার মধ্যে পার্থক্য আছে। এরা উভয়ই ছাগলের পুরুষ প্রজাতি তবে জন্মের কিছুদিন পরে যেসব পুরুষ লিঙ্গের ছাগলের অন্ডকোষ কেটে ফেলে দেওয়া হয় সে সব শাবককেই খাসি বলা হয়। ... আর যেসব শাবক পুরুষ ছাগলের এই অপারেশন হয় না তাদেরকেই পাঠা বলা হয়। তবে এরা না থাকলে ছাগলের আর বংশ বিস্তার হত না এবং ছাগল বিলুপ্ত হয়ে যেত। আর এর কারন হল অন্ডকোষ কাটলে এরা প্রজনন অক্ষম হয়, ফলে মনযোগ দিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ফলে খাসি মোটাতাজা হয় এবং খাসির মাংস সুস্বাদু হয়। আর যেসব শাবক পুরুষ ছাগলের এই অপারেশন হয় না তাদেরকেই পাঠা বলা হয়। তবে এরা না থাকলে ছাগলের আর বংশ বিস্তার হত না এবং ছাগল বিলুপ্ত হয়ে যেত। পাঠা মূলত লবণের ঘাটতি বা চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নিজের ত্যাগকৃত মূত্র নিজেই পান করে থাকে, অনেক সময় উত্তেজনা বসতও সে এই কাজ করে। আর মাদি ছাগলকে আকর্ষিত করতে পুরুষ ছাগল বা পাঠা এর শরির থেকে একটি ক্যামিকেল "4-ethyloctanal" নিঃসরণ করে যা বাতাসে এসে "4-ethyloctanoic acid" এ পরিণত হয় এবং উৎকট গন্ধ ছড়ায় যা অনেকেরই অপছন্দ। এই গন্ধ পাঠার মাংসেও থাকে যার ফলে পাঠার মাংস তেমন জনপ্রিয় না। মাদী ছাগলও গোশতের খুব ন...