Skip to main content

ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে কি পর্দা করার নিয়ম একই?

 না, ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে পর্দা করার নিয়ম একই নয়, যদিও উভয়কেই শালীনতা ও চক্ষুলজ্জা রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্দার মূল উদ্দেশ্য হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে ফিতনা (বিশৃঙ্খলা বা প্রলোভন) রোধ করা এবং সমাজের নৈতিক মান বজায় রাখা। এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য উভয় লিঙ্গের জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিয়মাবলী রয়েছে, যা তাদের শারীরিক গঠন, সামাজিক ভূমিকা এবং সৃষ্টিকর্তার নির্দেশনার উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত।

মেয়েদের পর্দা: মেয়েদের জন্য পর্দার বিধান তুলনামূলকভাবে কঠোর। তাদের পুরো শরীর ঢাকা বাধ্যতামূলক, মুখমণ্ডল ও হাতের কব্জি পর্যন্ত ছাড়া (যদিও কিছু মতানুযায়ী মুখমণ্ডলও ঢাকা)। পোশাক ঢিলেঢালা, অস্বচ্ছ এবং আকর্ষণীয় হওয়া যাবে না। এর মূল কারণ হলো, নারীর সৌন্দর্য এমনভাবে প্রকাশ না করা যাতে তা পুরুষদের জন্য প্রলোভন তৈরি করে। এই পর্দার মাধ্যমে নারীর সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা হয় এবং সমাজে নৈতিক অবক্ষয় রোধ করা হয়। হিজাব বা বোরকা পরা এই পর্দার একটি অংশ। নারী পুরুষের সামনে নিজেদের সাজসজ্জা প্রদর্শন করা থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া, মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ হারাম, যেমন বাবা, ভাই, স্বামী) ব্যতীত অন্য পুরুষদের সাথে একাকী হওয়া বা অবাধ মেলামেশা করা নিষিদ্ধ।

পুরুষদের পর্দা: পুরুষদের পর্দার বিধান প্রধানত চক্ষুলজ্জা এবং সতর ঢাকার সাথে সম্পর্কিত। পুরুষদের জন্য সতর নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। অর্থাৎ, এই অংশটুকু ঢাকা বাধ্যতামূলক। পুরুষের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পোশাক (যেমন হিজাব) বাধ্যতামূলক নয়, তবে তাদের পোশাকও শালীন ও ঢিলেঢালা হওয়া উচিত। পুরুষদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্দার দিক হলো তাদের দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করা। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, "মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।" (সূরা নূর, ২৪:৩০)। পুরুষরা কোনো নারীর প্রতি কামুক দৃষ্টিতে তাকানো থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়াও, তাদের এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে যা ফিতনা সৃষ্টি করে, যেমন অহেতুক নারীর সাথে মেলামেশা বা তাদের প্রতি আকর্ষণীয় আচরণ করা।

সংক্ষেপে, মেয়েদের জন্য পর্দা মূলত তাদের শরীর ঢাকার মাধ্যমে এবং ছেলেদের জন্য পর্দা প্রধানত তাদের দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। উভয় বিধানই সমাজের নৈতিক সুস্থতা এবং নারী ও পুরুষের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।

Comments

আরও দেখুন

লোহার জাহাজ ভাসে কেন ?

লোহার জাহাজ ভাসে কেন ? যদি বস্তুর ওজন বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজনের চেয়ে বেশী হলে বস্তুটি তরলে ডুবে  যাবে এবং বস্তুর ওজনের চেয়ে বস্তু দ্বারা অপসারিত তরল পদার্থের ওজন বেশী হলে বস্তুটি তরলে ভেসে থাকবে। তাহলে লোহার টুকরা পানিতে ভাসবে না কেননা লোহার টুকরা দ্বারা অপসারিত পানির ওজন লোহার টুকরার চেয়ে অনেক কম। লোহার জাহাজের ভিতরটা ফাঁপা বলে জাহাজ যে আয়তনের পানি অপসারণ করে তার ওজন জাহাজের ওজনের চেয়ে বেশী। তাই লোহার জাহাজ পানিতে ভাসে।     

চশমা আবিষ্কার

  ভারতীয় স্থপতি দেবনারায়ণের হাতে বিশ্বের প্রথম চশমা তৈরি হয়। এমনটাই দাবি করছেন ঋষিকুমার আগরওয়াল।  চশমা প্রসঙ্গে আদি শঙ্করাচার্যের লেখা অপরোক্ষানুভুতির ৮১তম শ্লোকে বলা হয়েছে- ‘ঠিক যেমন উপনেত্রের মধ্যে দিয়ে দেখলে সব খুব ছোট বস্তুকে/ বড় দেখা যায়, তেমনি ..’ মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে শুরুর থেকে জেনে নিন- আধুনিক চশমার উদ্ভাবক দেশ হিসেবে সাধারণভাবে ইতালির নাম উচ্চারিত হয়। দূরের জিনিসকে চোখের নাগালে নিয়ে আসার জন্য আতস কাচের ব্যবহার করার নজির দ্বাদশ শতকে ইতালিতে পাওয়া গিয়েছিল। বলা হয়, ১২৮৬ সাল নাগাদ ইতালিরই জিওর্দানো দা পিসা নামে জনৈক ব্যক্তি প্রথমবারের মতো চশমা তৈরি করেন। ১৭২৭ সালে আধুনিক চশমার প্রাথমিক নকশা তৈরি করেন ইতালিরই গিরোলামো সাভোনারোলা। পরবর্তীকালে সাভোনারোলার নকশার সূত্রে চশমা নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয় এবং তা ধীরে ধীরে আধুনিক রূপ পায়। তবে চশমার উদ্ভাবন নিয়ে ইউরোপিয়ানদের এই দাবী কতটা যথার্থ, তা নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। কারণ, সমসাময়িক এবং আরও পুরনো কিছু হিন্দু সাহিত্যে চশমার প্রসঙ্গ এর আগেই এসেছে। তাহলে কি চশমার জন্ম ভারতে! ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ অফথ্যালমোলজি’তে ১...

Bhuter Golpo - ভুতের গল্প - অন্ধকার রাত্রি

বয়সে ছোট হোক বা বড়   Bhut   নামটা শোনা মাত্রই আমাদের মনের মধ্যে একটা আলাদা শিহরন বা ভয়ের সৃষ্টি। অথচ মনের মধ্যে শত ভয় থাকা সত্ত্বেও আমরা   Bangla Bhuter Golpo   শুনতে ছাড়তাম না। ছোট বেলায় যেমন দাদু কিংবা ঠাকুমার কাছ থেকে আমরা নানা ধরনের   Vuter Golpo   শুনতাম। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় আমরা সবাই কাজের মধ্যে এত ব্যাস্ত হয়ে গিয়েছি যে কারো কাছে গল্প শোনানোর সময় হয়ে ওঠেনা। তাই আজকে আমার আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি একটি সত্যি কারের ভূতের গল্প। গল্প টিকে ৮ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তারই প্রথম ভাগটি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আরও   Bengali Love Story   এবং   Funny Jokes in Bengali   পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, আশাকরি গল্পটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। Bangla Vuter Golpo Online Reading | ভয়ঙ্কর ভূতের কাহিনি আজকের গল্প - অন্ধকার রাত্রি পর্ব - প্রথম রায় সাহেব থাকেন কলাবাগানে। অনেকখানি ভেতরের দিকে। দেয়ালঘেরা তিন কামরার একতলা একটা বাড়ি। আশেপাশে ছয়-সাততলা বিশাল বাড়ি ঘর উঠে গেছ...

গাওয়া ঘি কাকে বলে? বাসায় কীভাবে খাঁটি ঘি বানানো যায়?

  খাঁটি ঘি কে গাওয়া ঘি বলে। উপকরনঃ দুধের সর- ৫ কেজি পরিমাণ ঠাণ্ডা পানি- ২.৫ লিটার ঘি তৈরির জন্য যা লাগবে- মাটির পাত্র বা মালশা- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য) শিল-পাটা- (সর বাটার জন্য) কাঠের চামচ বা খুন্তি- ১টি (সর ঘুঁটার জন্য) প্রনালিঃ ১. প্রথমে দুধের সর নিয়ে নিন আর দুধের সর বাটার জন্য একটি পরিষ্কার শিল-পাটা নিন। এরপরে দুধের সর অল্প পরিমাণে করে শিল-পাটাতে নিয়ে বাটতে থাকুন। বাটার সময় পানি দেয়া যাবেনা। সরের পরিমাণ যেহেতু বেশি তাই একবারে সবটুকু একসাথে বাটতে যাবেন না। অল্প অল্প করে সর নিয়ে বেটে নিতে হবে। ২. এবার একটি মাটির পাত্র বা মালশা নিয়ে নিন। তাতে বাটা সর থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে কাঠের চামচ বা খুন্তি দিয়ে ঘুটতে থাকুন। এই প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব ততো দ্রুত করতে হবে। ৩. ভাল করে ঘুটা হয়ে গেলে সর থেকে ক্রিম তৈরি হবে। এভাবে বাকি সর থেকেই ক্রিম তৈরি করে নিন। ৪. ক্রিম তৈরি হয়ে গেলে এর মধ্যে ঠাণ্ডা পানি দিতে হবে। ক্রিমের পরিমাণ অনুযায়ী পানি দিতে হবে।পানি দিয়ে ঘুঁটার পরে ক্রিম থেকে সাদা দুধের মত পানি বের হয়ে ক্রিম পরিষ্কার হয়ে ঘন ডো এর মত উপরে ভেসে উঠতে থাকবে। যখন ক্রিমের সবটুকু ডো...

খাসি এবং পাঠার মধ্যে পার্থক্য কি?

খাসি এবং পাঠার মধ্যে পার্থক্য আছে। এরা উভয়ই ছাগলের পুরুষ প্রজাতি তবে জন্মের কিছুদিন পরে যেসব পুরুষ লিঙ্গের ছাগলের অন্ডকোষ কেটে ফেলে দেওয়া হয় সে সব শাবককেই খাসি বলা হয়। ... আর যেসব শাবক পুরুষ ছাগলের এই অপারেশন হয় না তাদেরকেই পাঠা বলা হয়। তবে এরা না থাকলে ছাগলের আর বংশ বিস্তার হত না এবং ছাগল বিলুপ্ত হয়ে যেত। আর এর কারন হল অন্ডকোষ কাটলে এরা প্রজনন অক্ষম হয়, ফলে মনযোগ দিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ফলে খাসি মোটাতাজা হয় এবং খাসির মাংস সুস্বাদু হয়। আর যেসব শাবক পুরুষ ছাগলের এই অপারেশন হয় না তাদেরকেই পাঠা বলা হয়। তবে এরা না থাকলে ছাগলের আর বংশ বিস্তার হত না এবং ছাগল বিলুপ্ত হয়ে যেত। পাঠা মূলত লবণের ঘাটতি বা চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নিজের ত্যাগকৃত মূত্র নিজেই পান করে থাকে, অনেক সময় উত্তেজনা বসতও সে এই কাজ করে। আর মাদি ছাগলকে আকর্ষিত করতে পুরুষ ছাগল বা পাঠা এর শরির থেকে একটি ক্যামিকেল "4-ethyloctanal" নিঃসরণ করে যা বাতাসে এসে "4-ethyloctanoic acid" এ পরিণত হয় এবং উৎকট গন্ধ ছড়ায় যা অনেকেরই অপছন্দ। এই গন্ধ পাঠার মাংসেও থাকে যার ফলে পাঠার মাংস তেমন জনপ্রিয় না। মাদী ছাগলও গোশতের খুব ন...