-->

জুলিয়ান কোপকের ( Juliane Koepcke ) গহিন এমাজন অরন্যে বাঁচার ১১ দিনের নিসঃঙ্গতার লড়াই

 মানুষের জীবন নিয়ে অনেক অবিশ্বাস্য লড়াই এর গল্প আছে যে গুলো সত্য। সপ্তদশী জুলিয়ান কোপকের জীবনের ১১টি দিন যখন তার বিমানটি ভেঙ্গে পরেছিল এমাজনের গহিন জঙ্গলে সেই দিনগুলোও ছিল সেরকম বাঁচার লড়াই ।

ডিসেম্বর ২৪ , ১৯৭১ জুলিয়ান কোপকে এবং তার মা লিমা , পেরু থেকে একটি ফ্লাইটে উঠেছিলেন এমাজন রেন ফরেস্টের গভীরে একটি শহর পুকাল্পা ( Pucallpa) যাবার উদ্দশ্যে ।প্লেনটি হঠাৎই বজ্রপাতে তড়িতাহত হয়ে আকাশ পথেই ভেঙ্গে পরে । জুলিয়ান (১৭) নিজেকে বাতাসের মধ্যে দিয়ে পরে যেতে দেখল তার সিটের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায়। দূর্ঘটনায় সেই ছিল একমাত্র জীবিত প্রাণী । ক্রূ সমেত বাকি ৯১ জন সকলেই মারা গিয়েছিল ।

জ্ঞান ফেরার পর সে বুঝলো তার একটি কলার বোন ভাঙ্গা , একটি হাতে গভীর কাটা এবং গোটা জঙ্গলে সে একা । কোন খাদ্য ও পানীয় চারিদিকে কোথাও নেই । একটি শর্টস্লিভ্ড ছোট পোষাক ( ছবিতে দেখুন ) ছাড়া পরনে কিছু নেই । নিজের আহত অবস্থা সত্ত্বেও জুলিয়ান বুদ্ধি খাটাতে লাগল তার এমাজন জঙ্গলের জ্ঞানকে কেন্দ্র করে যা সে তার বাবা ও মার কাছে শিখেছিল ।তাঁরা ছিলেন খ্যাতনামা বায়োলজিষ্ট ।

পরের ১১টি দিন জুলিয়ান গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পথ করে এগোল । পাতার সাহায্যে ঝর্না ও বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে পান করল । যা কিছু খাবার মত মনে হল খেতে লাগল , যেমন পোকা , বেরিস ,বাদাম ইত্যাদি । খোলা বাতাসেই ঘুমোত গাছের ডাল ও পাতার শয্যা করে । সে বেশ কিছু বন্য পশুর সংস্পর্শে এসেছিল যেমন বিষাক্ত সাপ ও জাগুয়ার , কিন্তু নিজের শেখা জ্ঞান ও সহজাত প্রবৃত্তি দ্বারা তাদের এড়িয়ে গিয়েছিল যা তার পিতা মাতা তাকে শিখিয়েছিলেন ।

শেষে ১১ দিন পর জুলিয়ান হাতে একটি ভেড়ান নৌকো পেল সঙ্গে একটি কুটির। স্থানীয় কাঠুরিয়ারা যারা জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহে এসেছিল এবং ঐ কুটিরে বিশ্রাম নিত তারা তাকে উদ্ধার করল এবং নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠিয়ে দিল । শরীরের ক্ষত , ভাঙ্গা হাড় ও মানসিক আঘাতের জন্য তার বেশ কিছুদিন চিকিৎসা হল । তারপর সে সুস্থ হয়ে নিজের বাড়ি ফিরে এল ।

>